কম্পিউটার একটি প্রযুক্তি যন্ত্র। এটি দিয়ে কাজ করাতে হলে এর বোধগম্য ভাষায় ডাটা ও ইনস্ট্রাকশন ইনপুট দিতে হয়। যে সব যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ দিয়ে কম্পিউটারে ডাটাসমূহ প্রবেশ করানো হয়, তাকে বা তাদেরকে ইনপুট ডিভাইস বলা হয়। অন্যভাবে বলা যায়, যে যন্ত্রের সাহায্যে কম্পিউটারের ভেতরে ডাটা ও কাজের নির্দেশ প্রদান করা হয়, তাই ইনপুট ডিভাইস (Input Device)।
কম্পিউটার বিভিন্ন ধরনের ডাটা নিয়ে কাজ করে থাকে। আর এসব ডাটা কম্পিউটারে প্রবেশ করানো বা ইনপুট দেওয়াই হলো ইনপুট ডিভাইসের বেসিক ফাংশন বা কাজ। নিচে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ও জনপ্রিয় কয়েকটি ইনপুট ডিভাইসের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা করা হলো–
১। কীবোর্ড (Keyboard) : কীবোর্ড দেখতে টাইপ রাইটারের মতো। কম্পিউটারের বেশিরভাগ ডেটা বা তথ্য কীবোর্ডের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়। টাইপ রাইটারের সাথে কীবোর্ডের প্রধান পার্থক্য হলো এর সাহায্যে শুধু অক্ষরবিন্যাস করা হয় না, প্রয়োজনীয় সকল নির্দেশ কম্পিউটারে প্রবেশ করানো হয়। এটি একটি অন্যতম প্রধান ইনপুট ডিভাইস। প্রোগ্রাম লেখার ক্ষেত্রে কী-বোর্ড দিয়েই বেশিরভাগ কাজ সম্পন্ন করা হয়।
২। মাউস (Mouse) : মাউস একটি অন্যতম প্রধান ইনপুট ডিভাইস। মাউসের সাহায্যে সহজেই প্রোগ্রাম নির্বাচন করে কাজ সম্পাদন করা যায়। এতে সময় অনেক কম লাগে। এ যন্ত্রের সাহায্যে কারসরকে মনিটরের এক অংশ থেকে অন্য অংশে সহজে সরানো যায়। তাছাড়াও এর সাহায্যে তথ্য সম্পাদন, গ্রাফিক্স ড্রইং, ছবি অঙ্কন ইত্যাদি কাজ সহজেই করা যায়।
৩। অপটিক্যাল রিডার (Optical Reader) : বিশেষ ধরনের লিখিত চিঠিপত্র, ডকুমেন্টের ওপর অপটিক্যাল রিডার ধরলে কম্পিউটার সেটি পড়ে মনিটরে ফলাফল প্রদর্শন করে।
৪। জয়স্টিক (Joystick) : এক ধরনের বিশেষ যন্ত্র যা গেম কার্ডের সাথে যুক্ত করে বিভিন্ন সংকেত বা নির্দেশ কম্পিউটারে প্রবেশ করানো হয়।
৫। স্ক্যানার (Scanner) : স্ক্যানারের সাহায্যে যেকোনো ধরনের ছবি, মুদ্রিত যেকোনো লেখা টেক্সট, গ্রাফ ইত্যাদি হুবহু কম্পিউটারে প্রবেশ করানো যায়।
৬। গ্রাফিক্স প্যাড (Graphics Pad) : স্লেটে যেমন পেন্সিল দিয়ে লেখা যায় তেমনি গ্রাফিক্স প্যাডে বিশেষ ধরনের পেন্সিল দিয়ে লেখা বা আঁকা যায়।
৭। লাইট পেন (Light Pen) : লাইট পেন হচ্ছে ডিভাইস হিসেবে ব্যবহৃত এক ধরনের আলোক সংবেদনশীল ইলেকট্রনিক পেন।
৮। টাচ স্ক্রীন (Touch Screen) : টাচ স্ক্রীনে সরাসরি মনিটরের পর্দায় আঙুলের স্পর্শের সাহায্যে কমান্ড দেওয়া যায়।
৯। ডিজিটাল ক্যামেরা (Digital Camera) : ডিজিটাল ক্যামেরাতে তোলা ছবি ক্যামেরার স্মৃতিতে থাকে যা পরে ক্যাবলের মাধ্যমে কম্পিউটারে সংযোগ দিয়ে ঐ ছবিকে মনিটরের পর্দায় দেখা যায়।
১০। মডেম (Modem) : যে যন্ত্রের মাধ্যমে টেলিফোন লাইনের মাধ্যমে এক কম্পিউটার হতে অন্য কম্পিউটারে তথ্য আদান-প্রদান করা যায় তাকে মডেম বলে। মডেম কম্পিউটারের ভাষাকে টেলিফোনের ভাষায় এবং টেলিফোনের ভাষাকে কম্পিউটারের ভাষায় রূপান্তর করে তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে।